QR কোড স্ক্যাম থেকে বাঁচার উপায়
একটি বর্গাকার সাদা কালো রঙের সাঙ্কেতিক ছবি। এই ছবিই এখন শহরের ঝাঁ চকচকে শপিং মল, রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে বাড়ির পাশের পলেস্তারা খসা ছোট দোকানে অবাধে বিচরণ করছে। পকেট থেকে স্মার্টফোন বার করে ছবিটির সামনে ক্যামেরা তাক করে চার থেকে ছয় সংখ্যার পিন দিলেই টাকা মেটানো কমপ্লিট। ডিজিটাল যুগে অনলাইনে অর্থ লেনদেনের ক্ষেত্রে জনতা যেমন UPI নির্ভর হয়ে পড়েছে, তেমনই এই সাদাকালো QR কোড স্ক্যান করে টাকা দেওয়া, নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে প্রবেশ করা, ও অনলাইনে পছন্দের পোশাক বা প্রসাধনী সামগ্রী দেখতে অভ্যস্ত হয়ে পড়ছে কোটি কোটি মানুষ। কিন্তু, ইদানীং এরই সাথে আরও একটি ঘটনা নিঃশব্দে বাড়ছে, যা হল QR Code Scam। ইদানীং সাদাসিধে দেখতে কিউআর কোডই প্রতারণার নয়া হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। একটু অসাবধান হয়ে পড়লেই নিঃশেষ হতে পারে ব্যাঙ্কের সমস্ত সঞ্চয়। আজ Gadgets 360 বাংলার এই প্রতিবেদন QR কোড স্ক্যাম এবং তার থেকে বাঁচার উপায় নিয়েই।
বর্তমানে অনলাইনে প্রতারণার যত পদ্ধতি সক্রিয়, তার মধ্যে সহজতম ও কার্যকরী হল QR কোড। হ্যাকিংয়ের বিন্দুমাত্র জ্ঞান লাগে না, শুধু প্রয়োজন হয় কুবুদ্ধির।আপাতদৃষ্টিতে এই সরল হাতিয়ারেই মানুষের বিশ্বাস এবং ভরসা আদায় করে টাকা লুট করছে সাইবার অপরাধীরা। টাকার অঙ্ক দশ বা হাজার হোক না কেন, নগদ দেওয়ার পরিবর্তে অনলাইন পেমেন্টর চল বাড়ছে। এখন প্রায় সমস্ত দোকানের দেওয়ালেই কিউআর কোডের ছবি সাঁটা থাকছে, নয়তো সামনে শো-কেসের উপর বোর্ড সাজানো থাকছে। গ্রাহকেরা ওই কোড স্ক্যান করে সহজেই টাকা মেটাতে পারছেন। কিন্তু সেই কিউআর কোডই বদলে দিয়ে প্রতারণার নতুন জাল বিছানো শুরু হয়েছে।
দোকানি একটু অসাবধান হলেই সুযোগ নিচ্ছে প্রতারকরা। চোখের আড়াল হতেই দোকানে লাগানো কিউআর সরিয়ে নিজেদের কোড বসিয়ে দিচ্ছে তারা। আবার কখনও কিউআর কোডের বোর্ডের উপর নিজেদের কিউআর কোডের স্টিকার লাগিয়ে চলে যাচ্ছে। যেহেতু তাদের কিউআর কোডটিও দোকানির মতো UPI পেমেন্ট প্ল্যাটফর্মগুলির মাধ্যমে বানানো, তাই দেখতে হুবহু এক হওয়ার কারণে ফারাক বোঝা অসম্ভব হয়ে পড়ছে। আর ক্রেতারা সেই দোকানের কিউআর কোড ভেবে স্ক্যান করলেই সর্বনাশ।
ক্রেতার পাঠানো টাকা দোকানদারের পরিবর্তে অন্যজনের অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।।এদিকে, টাকা আসেনি ফলে দোকানির সঙ্গে গ্রাহকের ঝামেলা বাঁধছে। এটা গেল QR কোড পাল্টে জালিয়াতির ঘটনা। আরও একটি নতুন ধরনের প্রতারণা শুরু হয়েছে। যেখানে মেসেজ অথবা ইমেলের মাধ্যমে উপহার জেতার লোভ দেখিয়ে QR কোড পাঠিয়ে বলা হচ্ছে, সামান্য টাকা প্রদান করলেই উপহার বাড়ি পৌঁছে যাবে। কিন্তু সেটা স্ক্যান করলে ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হওয়ার পাশাপাশি, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ফাঁকা হয়ে যেতে পারে। আবার রাস্তাঘাটেও বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে QR কোড বসিয়ে স্ক্যান করার কথা বলা হচ্ছে। সেটাও টাকা হাতাতে প্রতারকদের নতুন চাল হতে পারে।
এছাড়া, কোনও QR কোড নিরাপদ কীনা জানতে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। বেশ কয়েকটি QR স্ক্যানার অ্যাপ আছে যেগুলি অজানা ওয়েবসাইট ঢোকার আগে QR লিঙ্কের নিরাপত্তা পরীক্ষা করে। ফলে ভাইরাস বা ম্যালওয়ার ফোনে ঢুকে ক্ষতি করতে পারে না।
প্রযুক্তির সাম্প্রতিক খবর আর রিভিউস জানতে লাইক করুন আমাদের Facebook পেজ অথবা ফলো করুন Twitter আর সাবস্ক্রাইব করুন YouTube.