Photo Credit: Google
Google Veo 3 টেক্সট বা ইমেজ থেকে ভিডিও তৈরি করতে পারে
Google Veo 3 অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে ভারতীয় ব্যবহারকারীদের জন্য চালু হল। এটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) ব্যবহার করে বাস্তবসদৃশ ভিডিও বানানোর একটি প্রযুক্তি যা মে মাসে মার্কিন টেক জায়ান্টটির সফটওয়্যার নির্মাতাদের বার্ষিক সম্মেলনে আত্মপ্রকাশ করেছিল। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্যে AI ভিডিও তৈরির টুল আগে থেকেই ছিল গুগলের। নতুন Veo 3 সেই ভিডিও জেনারেশন মডেলের সবচেয়ে শক্তিশালী তথা অত্যাধুনিক সংস্করণ। কল্পনার এক নতুন দিগন্ত খুলে দেলে এটি। আপনি যা লিখবেন বা বিস্তারিত বর্ণনা দেবেন, তা নিখুঁত ভিডিওতে রূপান্তর করবে গুগলের নতুন এআই মডেল। ভিডিওর দৃশ্য, আবহসংগীত, অথবা সংলাপ — এমন বাস্তবসম্মত ভাবে তৈরি করবে যে ধরতেই পারবেন না পুরোটাই কৃত্রিম মেধার ভেলকি!
গুগলের শক্তিশালী এআই ভিডিও জেনারেশন টুল, Veo 3 এখন ভারতের ব্যবহারকারীদের কাছে উপলব্ধ। এই কৃত্রিম বৃদ্ধিমত্তা নির্ভর মডেল আপনার ভাবনার সঙ্গে মিলিয়ে ভিডিও করতে সক্ষম। শুধু বিষয়বস্তুটা স্পষ্ট ভাবে লিখে জানাতে হবে। আপনার লেখা বা স্থির চিত্রের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়ে যাবে স্বল্পদৈর্ঘ্যের ভিডিও। এক কথায়, বাস্তব এবং কাল্পনিক জগতের রীতিমতো আলিঙ্গন ঘটবে। এই প্রযুক্তির হাত ধরে মার্কেটিং, কনটেন্ট ক্রিয়েশন, এবং মিডিয়ার কাজে যুগান্তর আসতে পারে।
গুগল ভিও 3 এআই ভিডিও মডেলটি ব্যবহারকারীদের দেওয়া টেক্সট বা ইমেজ প্রম্পট থেকে হাই-ডেফিনেশন ভিডিও তৈরি করতে পারে। তবে এটি বিনামূল্যে ব্যবহার করা যাবে না। এটি গুগল এআই প্রো সাবস্ক্রিপশনের মাধ্যমে জেমিনি অ্যাপে চালু হচ্ছে। প্রো সাবস্ক্রিপশনের জন্য প্রতি মাসে খরচ 1,950 টাকা। গুগল নতুন AI ভিডিয়ো মডেলটি পরখ করতে গ্রাহকদের এক মাসের বিনামূল্যে ট্রায়াল দেওয়ার কথাও জানিয়েছে।
বিষয়বস্তু যাই হোক না কেন, একটি ভাইরাল ভিডিও বানাতে কয়েকটি জিনিস অপরিহার্য। যেমন একটি ক্যামেরা, মাইক্রোফোন, ও এক বা একাধিক চরিত্র। আবার ভিডিওর গুণমাণ বাড়াতে দরকার ভাল ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ও এডিট করার সফটওয়্যার। Google Veo 3 এই সমস্ত কিছুর উপর নির্ভরশীলতা কাটিয়ে আপনার লেখা বা প্রম্পট অনুযায়ী বাস্তবসদৃশ ভিডিয়ো তৈরি করবে।
Veo 3 ব্যবহারকারীদের লিখিত বা ইমেজ-ভিত্তিক প্রম্পটের উপর ভিত্তি করে HD (720p) রেজোলিউশনে 8 সেকেন্ডের ভিডিও ক্লিপ তৈরি করতে দেয়। অন্যান্য AI ভিডিয়ো বানানোর মডেলে যে সব ত্রুটি বা খামতি আছে, সেগুলো Veo 3-তে অনুপস্থিত। এটি কেবল দৃশ্য বা গ্রাফিক্স তৈরি করে না৷ এতে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক, সংলাপ, ও বাস্তবসম্মত বা নাটকীয় আবহ যোগ করা যায়। সমৃদ্ধ ও নিমগ্ন গল্প বলার এই সুযোগই একে অন্যান্য AI ভিডিয়ো বানানোর টুল থেকে আলাদা করেছে।
Veo 3 ব্যবহার করার জন্য, Android বা iOS ডিভাইসে Gemini অ্যাপ ডাউনলোড করতে হবে এবং AI Pro প্ল্যানে সাবস্ক্রাইব করতে হবে। ওয়েব ভার্সনও ব্যবহার করতে পারেন। সাবস্ক্রাইব করার পর, প্রতিদিন তিনটি পর্যন্ত Veo 3 Fast ভিডিও তৈরি করতে পারবেন। এই সীমা অতিক্রম করার পরে, অ্যাপটির স্বয়ংক্রিয়ভাবে Veo 2 মডেলে নিয়ে যাবে, যা কম ফিচার্স সহ ভিডিয়ো জেনারেটর টুলটির পূর্ববর্তী সংস্করণ। তবে এই মডেলটির জন্য বেশ কয়েকটি আপডেটও চালু করেছে গুগল।
চ্যাটজিপিটি বা জেমিনি চ্যাটবট যেমন ভাবে ব্যবহার করেন, Veo 3 দিয়ে ভিডিও তৈরি করতে একই পদ্ধতিতে ব্যবহারকারীদের একটি প্রম্পট লিখতে হবে — যেমন একটি বিবরণ বা ছবি। ধরা যাক, আপনি লিখলেন, "স্বামী বিবেকানন্দ ও নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু একসাথে বসে মধ্যাহ্নভোজ করছেন'"। প্রম্পট দেওয়ার পরে, AI অডিও এবং ভিজ্যুয়াল এফেক্ট সহ দ্রুত একটি সম্পূর্ণ ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে আপনার সামনে রাখবে।
গুগলের ডেভেলপার কনফারেন্স সমাপ্ত হওয়ার পর, Veo 3 দিয়ে বানানো প্রচুর ভিডিয়ো ইন্টারনেটে ছড়িয়ে পড়েছিল। সেগুলো এতটাই বাস্তবিক ছিল যে অনেকেই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না যে, পুরোটাই কৃত্রিম মেধার কারসাজি। প্রতিটি চরিত্র ছিল স্বাভাবিক গড়নের এবং তাদের ঠোঁটের নড়াচড়ার সাথে সংলাপ হুবহু মিলে যাচ্ছিল। তাই AI ভিডিওর সম্ভাব্য অপব্যবহার রোধ করতে, সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছে গুগল। Veo 3 দিয়ে তৈরি সমস্ত ভিডিওতে দৃশ্যমান এবং অদৃশ্য ওয়াটারমার্ক থাকে যা নির্দেশ করে যে সেগুলি AI-জেনারেটেড। অদৃশ্য ওয়াটারমার্কগুলি সিন্থআইডি (SynthID) ব্যবহার করে, যা গুগলের তৈরি একটি প্রযুক্তি৷ এটি এআই-জেনারেটেড কন্টেন্ট ট্র্যাক করতে সাহায্য করে।
প্রযুক্তির সাম্প্রতিক খবর আর রিভিউস জানতে লাইক করুন আমাদের Facebook পেজ অথবা ফলো করুন Twitter আর সাবস্ক্রাইব করুন YouTube.
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন