Nano Banana Pro গুগলের সবচেয়ে উন্নত AI ছবি তৈরি ও এডিট করার মডেল।
Photo Credit: Google
Nano Banana Pro uses Gemini’s state-of-the-art reasoning and real-world knowledge
Nano Banana মনে আছে তো? Google-এর কৃত্রিম মেধা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) নির্ভর যে ইমেজ এডিটর সোশ্যাল মিডিয়া তোলপাড় করেছিল। সাধারণ ছবিকে আটের দশকের রেট্রো লুকে বদল হোক বা কোনও ছবিকে থ্রিডি মডেলে রূপান্তর — চোখের নিমেষে তৈরি হয়ে যাচ্ছিল অবিকল আসল ছবি, তাও শুধুমাত্র ইংরেজিতে লিখে, কোনও এডিটিং স্কিল ছাড়াই। মার্কিন টেক জায়ান্টটি খুব সম্প্রতি Gemini 3 মডেল প্রকাশ করেছে, যা ইতিমধ্যেই প্রযুক্তি জগতে সাড়া ফেলে দিয়েছে। আর এখন Nano Banana Pro লঞ্চ করেছে তারা৷ এটি Gemini 3-এর উপর ভিত্তি করে তৈরি আরও উন্নত ইমেজ এডিটিং মডেল, যা অরিজিনাল Nano Banana-এর তুলনায় আরও বাস্তবসদৃশ ছবি বানাতে সক্ষম। মডেলটি এতটাই দক্ষতার সঙ্গে ছবি তৈরি করছে যে, কৃত্রিম মেধার সৃষ্টি বলে মনেই হচ্ছে না।
এক কথায়, ন্যানো ব্যানানা প্রো গুগলের সবচেয়ে উন্নত AI ছবি তৈরি ও এডিট করার মডেল। ফটোশপে যে কাজ করতে কয়েক ঘন্টা লাগে, সেটাই নতুন মডেলটি কয়েক সেকেন্ডে তৈরি করে দেবে। এর জন্য কোনও এডিটিং দক্ষতার প্রয়োজন নেই, ঠিকমতো প্রম্পট বা নির্দেশ লিখলেই কাজ হাসিল। ন্যানো ব্যানানা প্রো 2K ও 4K রেজোলিউশনে ছবি বানাতে পারে। আর ঠিক এখানেই বাজিমাত করেছে গুগল। প্রতিটি ছবি আসল ও জীবন্ত হয়ে উঠবে।
ন্যানো ব্যানানা প্রো এর সবয়ে বড় আপগ্রেড হল, এটি ছবির ভিতরে স্পষ্ট ও পরিস্কার টেক্সট লিখতে পারে। গুগল এই কাজ এতটাই সূক্ষ্মতা ও দক্ষতার সঙ্গে করছে যে অন্যান্য এআই ইমেজ জেনারেশন মডেল ধারেকাছেও আসবে না। আপনি চাইলে একে কোনও জটিল খাবারের পদ নিয়ে একটি ইনফোগ্রাফিক বানাতে বলতে পারবেন। সেখানে পুরো পদ্ধতি ধাপে ধাপে বাস্তব তথ্য ও ভিজ্যুয়াল দিয়ে সাজানো থাকবে।
Nano Banana Pro যে কোনও ছবিতে থাকা টেক্সট সঠিকভাবে ডিকোড করতে পারবে এবং প্রয়োজনে নিখুঁতভাবে ব্যবহার করতে পারবে। বানান ভুল হওয়ার সম্ভাবনা জিরো। গুগল বলছে, "এটি সরাসরি ছবির মধ্যেই সঠিক ও স্পষ্ট লিখতে পারে। ছোট ট্যাগলাইন বা বড় প্যারাগ্রাফ, সবকিছু নির্ভুলভাবে তৈরি করতে সক্ষম।"
ন্যানো ব্যানানা প্রো গুগল সার্চ থেকে রিয়েল-টাইম ডেটা টেনে এনে তথ্য-নির্ভর ছবি তৈরি করতে পারে। যেমন, আপনি নির্দেশ দিতে পারেন, কলকাতায় আগামী এক সপ্তাহ কেমন তাপমাত্রা থাকবে, তার উপর একটি পোস্ট বানিয়ে দিতে। অথবা ফুটবল বা ক্রিকেট স্কোরের উপরেও ছবি বানাতে পারবেন।
গুগলের নতুন ইমেজ জেনারেশন মডেল ছবি এডিটিং করার সময় আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ দেয়। ক্যামেরার অ্যাঙ্গেল পরিবর্তন, ব্যাকগ্রাউন্ডে দিন বা রাত নির্বাচন, আলো-আধারির পরিবেশ, ব্যাকগ্রাউন্ড ব্লার, বা ছবির নির্দিষ্ট কোনও বস্তুর উপর ফোকাস করে এডিট করার প্রম্পট দিতে পারবেন। এমনকি ছবির শুধুমাত্র একটি অংশ এডিট করে বাকিটা অপরিবর্তিত রাখা যায়। অর্থাৎ, কয়েক সেকেন্ডেই পেশাদার মানের ছবি তৈরি হয়ে যাবে।
গুগল আরও দাবি করছে, ন্যানো ব্যানানা প্রো মুখ ও বস্তুর ধারাবাহিকতা খুব ভালভাবে বজায় সক্ষম। এটি একসঙ্গে চৌদ্দটি ভিন্ন ছবি মিশিয়ে একটি ছবি বানাতে পারে। এবং তাতে থাকা পাঁচজন ব্যক্তির মুখ অবিকল এক থাকবে। সংক্ষেপে, অরিজিনাল ন্যানো ব্যানানা মডেলে যে অভিজ্ঞতা ও মজা পেয়েছিলেন, সেটা আরও পরিণত ও উন্নত স্তরে নিয়ে গিয়েছে ন্যানো ব্যানানা প্রো।
কৃত্রিম মেধার ছবি বানানোর ক্ষমতা বাড়তেই সাইবার অপরাধ আরও উর্দ্ধমুখী হওয়ার উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। সবার কাছে উচ্চমানের ও বাস্তবসদৃশ ছবি জেনারেট করার সুবিধা চলে এলে, পাল্লা দিয়ে বিশ্বাসযোগ্য কিন্তু ভুয়ো ছবি বানানোর প্রবণতা বাড়বে। ফলে একশ্রেণীর মানুষের মধ্যে মিথ্যা তথ্য ছড়ানো, সম্মানহানি, এবং জালিয়াতি করতে উৎসাহ পাবে।
গুগল অবশ্য জানাচ্ছে, ন্যানো ব্যানানার মাধ্যমে তৈরি প্রতিটি ছবির ভিতরে একটি ডিজিটাল ওয়াটারমার্ক লুকানো থাকবে। এটি খালি চোখে দৃশ্যমান হবে না, কিন্তু জেমিনাই অ্যাপে আপলোড করে চেক করে নিতে পারবেন যে, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি কিনা। গুগল SynthID নামে একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে আপনাকে জানিয়ে দেবে ছবি AI কিনা।
ন্যানো ব্যানানা প্রো জেমিনাই অ্যাপ থেকে ব্যবহার করা যাবে। একে জেমিনাই 3 প্রো ইমেজ নামেও ডাকা হচ্ছে। বিনামূল্যে ব্যবহারকারীদের জন্য ছবি তৈরির লিমিট আছে। সাবস্ক্রিপশন থাকলে আরও বেশি ছবি বানানো যাবে। জানিয়ে রাখি, 35,100 টাকা দামের Gemini 3 মডেল সহ গুগলের AI Pro প্ল্যান MyJio অ্যাপের মাধ্যমে সম্পূর্ণ নিখরচায় অ্যাক্টিভেট করা যাচ্ছে। ফ্রি সাবস্ক্রিপশন পেতে গেলে শুধুমাত্র সক্রিয় জিও সিম ও আনলিমিটেড 5G প্ল্যান থাকতে হবে।
প্রযুক্তির সাম্প্রতিক খবর আর রিভিউস জানতে লাইক করুন আমাদের Facebook পেজ অথবা ফলো করুন Twitter আর সাবস্ক্রাইব করুন YouTube.
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন