JioPC এক ধরনের ভার্চুয়াল কম্পিউটার যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়।
Photo Credit: Jio
JioPC একটি ভার্চুয়াল ডেস্কটপ পরিষেবা
JioPC পরিষেবার হাত ধরে নতুন বিপ্লবের আভাস। 2016 সালে ফ্রি 4G ডেটা ও ভয়েস কল পরিষেবা চালু করে দেশের স্মার্টফোন তথা ইন্টারনেটের দুনিয়ায় বিপ্লব ঘটিয়েছিল মুকেশ আম্বানির জিয়ো। সেই মাইলফলকের এক দশক পূর্ণ না হতেই আরও একটি মাহেন্দ্রক্ষণে দাঁড়িয়ে গোটা দেশ। আগে রিলায়েন্সের লক্ষ্য ছিল, ঘরে ঘরে ইন্টারনেট, আর এখন প্রতিটি বাড়িতে কম্পিউটার পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করল আম্বানির সংস্থার তৈরি JioPC। এতে একটি স্মার্টফোনের থেকেও কম দামে ডেস্কটপের মতো সুবিধা পাওয়া যাবে। বর্তমানে, দেশের মাত্র 15 শতাংশ বাড়িতে কম্পিউটার রয়েছে। জিওর লক্ষ্য, সেই চিত্রটা সম্পূর্ণ বদলে দেওয়া।
JioPC কম্পিউটার বা ল্যাপটপের মতো কোনও যন্ত্র নয়, যেখানে আলাদা করে মাদারবোর্ড, পাওয়ার সাপ্লাই, বা স্টোরেজ ডিভাইসের মতো হার্ডওয়্যার রয়েছে। এটি হল ক্লাউড পিসি৷ সহজ করে বললে, এটি এক ধরনের ভার্চুয়াল কম্পিউটার যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ব্যবহার করা যায়। এটি থাকলে আলাদা করে কম্পিউটার কেনার প্রয়োজন পড়বে না। জিওপিসি ব্যবহার করার জন্য শুধু দরকার ইন্টারনেট সংযোগ, টিভি এবং সেট-টপ বক্স। বর্তমানে, দেশের 70 শতাংশ বাড়িতে টিভি দেখা হয়। আর এখন বাড়ির সেই সাধারণ টিভি বদলে যাবে ডেস্কটপে। একে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বলে দাবি করেছে রিলায়েন্স। একটি সাধারণ কম্পিউটারের মধ্যেই যেখানে সমস্ত ডেটা স্টোর করা থাকে, সেখানে ক্লাউড পিসির ডেটা রিমোট সার্ভারে অর্থাৎ অনলাইনে সংরক্ষণ করে রাখা হয়।
জিও এয়ার ফাইবার বা ফাইবার ব্রডব্যান্ডের সাথে আসা সেট-টপ বক্সের মাধ্যমেই জিওপিসি ব্যবহার করা যাবে। ব্রডব্যান্ড ব্যবহারকারীরা একেবারে নিখরচায় ক্লাউড পিসি চালাতে পারবে। আপাতত 3 মাসের জন্য ফ্রি ট্রায়ালের সুযোগ দিচ্ছে কোম্পানি। আলাদা করে কিনতে গেলে 5,499 টাকা খরচ হবে। কী-বোর্ড ও মাউস সংযোগ করলেই টিভি বা মনিটরের স্ক্রিন ভার্চুয়াল ডেস্কটপে রূপান্তরিত হবে। তার আগে অবশ্য জিও স্টোরে গিয়ে জিওপিসি ইনস্টল করে নিতে হবে। তবে এখন সবাই অ্যাক্সেস পাবে না। পরিষেবাটি বর্তমানে ট্রায়াল মোডে রাখা হয়েছে। ওয়েটিং লিস্ট অনুযায়ী ধাপে ধাপে সমস্ত গ্রাহকদের জন্য চালু হবে।
জিওপিসি পরিষেবা সম্পূর্ণ ইন্টারনেট-নির্ভর। অপারেটিং সিস্টেম, অ্যাপ্লিকেশন, ফাইল থেকে শুরু করে সমস্ত কিছু ক্লাউড পরিষেবা প্রদানকারীর ডেটা সেন্টারে জমা করা থাকে। হার্ডওয়্যার, সফটওয়্যার, এবং সিকিউরিটি সবই তাদের জিম্মায়। জিওপিসি-র প্রাথমিক সংস্করণে চারটি কোরের সিপিইউ, 8 জিবি র্যাম, 2.4 গিগাহার্টজ ক্লক স্পিডের প্রসেসর, ও 128 জিবি HDD স্টোরেজ রয়েছে।
পরীক্ষামূলক পর্যায়ে থাকার কারণে জিওপিসি-র সাথে ওয়েবক্যাম বা প্রিন্টার সংযোগ করার সুবিধা থাকছে না।ব্রাউজারের সাহায্যে মাইক্রোসফট অফিসের অ্যাক্সেস মিলবে, অথবা লিব্রা অফিসের মতো ওপেন সোর্স অ্যাপ দিয়েই কাজ করতে হবে। কোম্পানি অপারেটিং সিস্টেমের নাম উল্লেখ করেনি, তবে এতে Jio Platforms OS আছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
জিওপিসি-র প্রাথমিক সংস্করণ কিন্তু হাই-পারফরম্যান্স প্রদানের জন্য তৈরি হয়নি, এতে টুকটাক কাজই চালানো যাবে। তবে পরবর্তী সংস্করণে আরও উন্নতি আসতে পারে। রিলায়েন্স বলেছে, জিওপিসির ধারণা হল, নিম্নআয়ের পরিবারগুলির কাছে কম্পিউটিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। জিওপিসি ওয়েব ব্রাউজিং, ওয়ার্ড প্রসেসিং, ই-লার্নিং সেশন এবং অ্যাপ চালানোর ক্ষমতার মতো কার্যকারিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি দেয়।
প্রযুক্তির সাম্প্রতিক খবর আর রিভিউস জানতে লাইক করুন আমাদের Facebook পেজ অথবা ফলো করুন Twitter আর সাবস্ক্রাইব করুন YouTube.
বিজ্ঞাপন
বিজ্ঞাপন